Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

স্বাদুপানির ঝিনুকে মুক্তা চাষ : গবেষণায় অর্জিত সাফল্য

স্বাদুপানির ঝিনুকে মুক্তা চাষ : গবেষণায় অর্জিত সাফল্য
ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ
মুক্তা একটি দামি রত্ন ও আভিজাত্যের প্রতীক। প্রধানত মুক্তা অলংকার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, এ ছাড়া মুক্তাচূর্ণ ওষুধ ও প্রসাধন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ঝিনুকের খোলস দিয়ে বিভিন্ন রকমের দৃষ্টিনন্দন দ্রব্যাদি তৈরি করা যায়। ঝিনুক পোল্ট্রি ফিড, মাছের খাবার ও বহির্বিশ্বে মানুষের খাবার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। 
বাংলাদেশের উষ্ণ আবহাওয়া ও জলাশয় মুক্তাচাষ উপযোগী। এটি একটি নারী ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে খুব সহজেই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। এসব দিক বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কর্তৃক ‘মুক্তা চাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ নামে একটি উন্নয়ন প্রকল্প ২০১২-১৯ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রকল্পের আওতায় গবেষণা, প্রশিক্ষণ, মাঠভিত্তিক প্রদর্শনী, সেমিনার ইত্যাদি কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে ইনস্টিটিউট হতে নি¤েœাক্ত সফলতা অর্জিত হয় : 
জরিপের মাধ্যমে বাংলাদেশে মুক্তা উৎপাদনে সক্ষম ৭ প্রজাতির ঝিনুক শনাক্তকরণ।
  স্বাদুপানির ঝিনুকে সফলভাবে মুক্তা (জরপব ঢ়বধৎষ) উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন।
  ঝিনুকে ইমেজ মুক্তা বা ডিজাইন মুক্তা তৈরির কৌশল উদ্ভাবন।
  দেশীয় ঝিনুকে ৪ রঙের যেমন-কমলা, গোলাপি, ছাই ও সাদা রঙের মুক্তা উৎপাদন করা হয়েছে।
  দেশীয় যন্ত্রপাতির মাধ্যমে গোল মুক্তা এবং ডিজাইন মুক্তার প্রধান উপাদান নিউক্লি উৎপাদনে সফলতা অর্জন।
  উৎপাদিত মুক্তার পোস্ট হারভেস্ট ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি উদ্ভাবন এবং এর মাধ্যমে মুক্তার ঔজ্জ্বল্য এবং স্থায়িত্ব বৃদ্ধি।
  মুক্তা উৎপাদনকারী ঝিনুকের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন।
  ইনস্টিটিউট থেকে এরই মধ্যে মুক্তা চাষ বিষয়ে ২২২০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান।
  দেশের ৪০টি জেলার ৮২টি উপজেলায় বর্তমানে ১৫০ জন চাষি মুক্তা চাষ (মূলত : ইমেজ মুক্তা) করছেন।
মুক্তা চাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ : সম্প্রতি মাঠপর্যায়ে মুক্তা চাষের ব্যাপক চাহিদা লক্ষ করা যাচ্ছে। বর্তমানে ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, নেত্রকোনা, ঝিনাইদহ, সিলেট, পিরোজপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লাসহ দেশের ৪০টি জেলার ৭৫টি উপজেলার মোট ১০৭ জন প্রান্তিক খামারি মুক্তা চাষে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও অনেকে মুক্তা চাষে আগ্রহী হয়েছেন এবং প্রশিক্ষণের জন্য ইনস্টিটিউটে যোগাযোগ করছেন।
প্রশিক্ষণ প্রদান : ইনস্টিটিউট কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘মুক্তা চাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের আওতায় এ যাবত মোট ২২২০ জনকে মুক্তা চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণে গ্রামীণ বয়স্ক মহিলাসহ বিপুলসংখ্যক নারী অংশগ্রহণ করেছেন। অনেক জেলায় নারীরা এখন মুক্তা চাষ করছেন এবং স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রশিক্ষণ মূল্যায়নে দেখা গেছে, নারীরা ঝিনুক অপারেশন পদ্ধতি সহজে আয়ত্ত করতে পারে।
মুক্তা বাজারজাতকরণ
 দেশে উৎপাদিত মুক্তার বাজার এখনও তেমনভাবে গড়ে উঠেনি। কোনো কোনো চাষি মুক্তা উৎপাদন করে অলংকারের দোকানে সরবরাহ করেছেন। এসব মুক্তা পরবর্তীতে অলংকারে ব্যবহার করে অধিক মূল্যে বিক্রয় করা হচ্ছে। তা ছাড়া, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তাচাষিগণ নিজস্ব উদ্যোগে অনলাইন/অফলাইনের মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদিত ইমেজ মুক্তা ও মুক্তাজাত অলংকার বিক্রি করছেন। তন্মধ্যে বেশ কয়েকজন চাষি নিজস্ব উদ্যোগে পার্শ্ববর্তী একটি দেশে নিজেদের খামারে উৎপাদিত ইমেজ মুক্তা ও মুক্তাজাত অলংকার বিক্রি করছেন। উল্লেখ্য, চাষি পর্যায়ে একটি ভালো মানের ইমেজ মুক্তা উৎপাদনে খরচ হয় মাত্র ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ১ বছর পর তা ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। ইমেজ মুক্তার অলংকারে তার বিভিন্ন মান অনুযায়ী ৫০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া গোল মুক্তা/ইমেজ মুক্তা উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত নিউক্লি এবং ইমেজ এখন চাষিরা নিজেরাই তৈরি ও বিক্রয় করছেন, যা পূর্বে উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো।
আড়ংয়ের সাথে চুক্তি সম্পাদন : সম্প্রতি আড়ং দেশের মুক্তা চাষিদের সাথে তাদের খামারে উৎপাদিত মুক্তা ক্রয় সংক্রান্ত একটি চুক্তি সম্পাদন করেছে। ফলে আড়ংয়ের নির্দিষ্ট ডিজাইন অনুযায়ী খামারিরা মুক্তা উৎপাদন করছে। অদূর ভবিষ্যতে আড়ংয়ের বিভিন্ন আউটলেটে বাংলাদেশের মুক্তার অলংকার বিক্রি হবে। 
মুক্তা চাষি সমিতি গঠন : বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শে মুক্তা চাষিরা ইতোমধ্যে ‘বাংলাদেশ মুক্তা চাষ ফাউন্ডারস অ্যাসোসিয়েশন’ নামে ১টি সমিতি গড়ে তুলেছেন। দেশে মুক্তা উৎপাদন ও বিপণনের লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা করাই এ সমিতির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। সমিতির বিভিন্ন সদস্য এখন নিজেরাই অনেককে হাতে-কলমে মুক্তা উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তাছাড়া সমিতির মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদিত মুক্তা, মুক্তার তৈরি অলংকার এবং কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ডিজাইন/ইমেজ বাজারজাত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আশা করছে দেশের বিশাল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে মাছ চাষের মতো গ্রামীণ অর্থনীতিতে মুক্তা চাষও অদূর ভবিষ্যতে নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।
 
লেখক : মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহ। 
ফোন : ০৯১৬৫৮৭৪, ই-মেইল : ফমনভৎর@মসধরষ.পড়স

COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon